জীবনে বাকি সবটায় অ্যাসথেটিক্স দরকার হয়: স্বস্তিকা মুখার্জী
আমায় নাচলে কদর্য লাগবে বলে আমি নাচব না, আমার মধ্যে গ্রেস নেই তাই আমি নাচব না, আমি মোটা তাই আমি নাচব না, আমার গলায় সুর নেই তাই আমি গাইব না, আমায় ভালো দেখতে নয় তাই আমি ছবি তুলব না, আমি সাজতে পারি না তাই আমি সাজব না, আমায় দেখতে খারাপ তাই আমি ছবি পোস্ট করব না, কিন্তু আমি একজন মহিলা এবং একজন আর্টিস্ট হয়ে অন্য মহিলাদের প্রতি কুৎসিত মন্তব্য নিশ্চয়ই করব, জোর গলায় করব, তাদের চেহারা, গায়ের মাংস, কণ্ঠ, জামাকাপড়, সাজগোজ সব কিছু নিয়ে অশালীন ভাবে কথা বলব, কারণ কথা বলার জন্য কোনো অ্যাসথেটিক্সের প্রয়োজন হয় না। জীবনে বাকি সবটায় অ্যাসথেটিক্স দরকার হয়।
এই সময়ে দাঁড়িয়েও এগুলো হচ্ছে! এই সময়টা গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে চারদিকে এত হাহাকার, এতো মৃত্যু, অবসাদ, মানুষ একা আটকে পড়ে আছে, বাবা মায়ের মৃত্যুর সময়েও পাশে থাকতে পারছে না, নিজেদের ব্যস্ত বা খুশি বা তার চেয়েও বড় কথা উন্মাদ হয়ে যাওয়ার থেকে বাঁচার জন্যে সোশাল মিডিয়ার দ্বারস্থ হচ্ছে। যার যা খুশি করছে, এত সময় নিয়ে কী করবে না হলে? সেখানে এত বিদ্বেষ কীসের? একে অপরের প্রতি এত রাগ, অপমান কেন? এরা শিল্পী? এমন ছোট কদর্য মন নিয়ে শিল্পী হওয়া যায়? কী লজ্জার!
আর সারা পৃথিবীতে যখন মহিলারা নিজের শরীর নিয়ে মন্তব্যের বিরুদ্ধে লড়ছে, হাড়গিলে, রোগা, থপথপে মোটা - লড়াইটা যখন সবার, আমারও বটে, আমার চেহারা মোটেও হিরোইনসুলভ নয়। সারাটাক্ষণ 'ঝুলে যাওয়া বুক' আর 'হাতির মত পশ্চাৎদেশ' নিয়ে কটুক্তি শুনতে হয়, আমি আমার ক্রাফট দিয়ে নিজেকে আলাদা করে রাখি, আমি যেটা পারি সেটা আমি এমন পারদর্শীতার সঙ্গে করি যে আমার চেহারা তুচ্ছ হয়ে যায়৷ যে যেটা পারে সে সেটা মন দিয়ে করুক, যে যেটা পারে না তারাও করুক, আগে মুক্তি পাই সবাই তারপর বাকিটা দেখা যাবে।
কেউ কাউকে আক্রমণ করলেই বাদ দিয়ে দেব। আর সবাই একটু সোচ্চার হন, 'থাক বাদ দাও' আর 'যাকগে' বলার দিন শেষ। দিন এমনিই শেষ!
© স্বস্তিকার ফেসবুক পেইজের টাইমলাইন থেকে।

No comments